সর্বশেষ মৌসুমের বাজে অভিজ্ঞতার পর ফুটবল সুপারস্টার লিওনেল মেসি বার্সেলোনা ছাড়ছেন এমন গুঞ্জন বেড়েই চলেছে। এধরণের গুঞ্জন পূর্বে অনেকবার শোনা গেলেও এবারের গুঞ্জনের আগুন বাতাস দিয়েছেন স্বয়ং মেসিই। ফলে ফুটবল পাড়ায় টক অফ দ্য টাউন মেসির বার্সা প্রস্থান। সবমিলিয়ে মেসি ভক্তদের মন খারাপ হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে লিওনেল মেসি ভক্তদের জন্য সুখবর দ্বিতীয় ফুটবলার ও চতুর্থ অ্যাথলেট হিসেবে ব্যক্তিগত সম্পদের হিসেবে বিলিয়নার ক্লাবে ঢুকতে যাচ্ছেন এই ফুটবল জায়ান্ট, এমনটাই জানিয়েছে ফোর্বস ম্যাগাজিন।
চলতিবছর জুনে প্রথম ফুটবলার হিসেবে বিলিয়নিয়ার ক্লাবে নাম লেখান আরেক ফুটবল জায়েন্ট জুভেন্টাস তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্দো। এবার নাম লেখাতে যাচ্ছেন লিওনেল মেসি। ফোর্বস জানিয়েছে চলতিবছর সেপ্টেম্বরেই লিওনেল মেসি বিলিয়ন ডলারের মালিক হবেন। তবে এরসাথে দলবদলের কোনো সম্পর্ক নেই। বরঞ্চ ন্যু ক্যাম্পে থাকলেও তিনি বিলিয়নিয়ার ক্লাবে জায়গা করে নিবেন।
বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। এমনকি রাজস্ব আদায়েও সবচেয়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিণত হয়েছে খেলাটি। বেতন-বোনাসেই এখন আর খেলোয়াড়দের আয় সীমাবদ্ধ নেই। বরং খেলোয়াড়দের ইনকামের বড় উৎস স্পন্সর, আছে বিজ্ঞাপনও। অনেক খেলোয়াড়তো ব্যবসায় খাতে শক্ত অবস্থান করে নিচ্ছেন। এছাড়াও আছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকেও আয়। তাই বিলিয়ন ডলারের মালিক হওয়া এখন আর মোটেই দিবাস্বপ্ন বলার সুযোগ নেই ফুটবলারদের জন্য। তারপরেও বিলিয়ন ডলারতো সহজ কথা নয়! ১০০ কোটি ডলারে ১ বিলিয়ন অর্থাৎ বাংলাদেশে এর মূল্য দাঁড়াবে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা!
তবে এই দুই ফটবলারের আগেই বিলিওনিয়ার ক্লাব দখল করেছেন বিশ্বসেরা আরও দুই অ্যাথলেট। যার প্রথমজন বিখ্যাত গল্ফ খেলোয়াড় টাইগার উডস। ২০০৯ সালে প্রথম অ্যাথলেট হিসেবে বিলিয়নের ঘরে প্রবেশ করেন তিনি। তার এই আয়ের বড়অংশটা এসেছে স্পোর্টস ব্রান্ড নাইকির তার চুক্তি থেকে। এর ৪ বছর পর ২০১৩ সালে এইক্লাবে যোগ দেন বিখ্যাত বক্সার ফ্লয়েড মেওয়েদার। শিকাগো বুলস এবং ওয়াশিংটন উইজার্ডসের বাস্কেটবল খেলোয়াড় মাইকেল জর্ডান তার ১৫ বছরের ক্যারিয়ারে আয় করেছেন ৫৫০ মিলিয়ন। তার আয়ের বড়অংশটা এসেছে এনবিএর ক্লাব শার্লোট হর্নেটসে তার শেয়ার থেকে।
গত দুই বছরে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং টুইটার জুড়ে ৪৩৩ মিলিয়ন ফলোয়ার যুক্ত হয়েছে। যা তাকে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় তারকায় পরিণত করেছে ও সবচেয়ে মার্কেটেবল অ্যাথলেটের তকমাও পাইয়ে দিয়েছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠাব হুকিত জানিয়েছে এই বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তার আয় দাঁড়িয়েছে ২৮ মিলিয়ন ডলার। নাইকির সাথে আজীবন চুক্তি এবং হার্বালাইফের সাথে দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারিত্ব, পাশাপাশি তার লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড “সিআরসেভেন” -এর পণ্য যেমন, জুতা, সুগন্ধি, ডেনিম, হোটেল, জিম এবং সর্বশেষ অন্তর্ভুক্ত সানগ্লাস সবমিলিয়ে তার মোটা আয়ের মোটা আয়ের উৎস। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো গত মৌসুমে তার আয়ের ১০৫ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ৪৫ মিলিয়ন ডলার এগুলো থেকে লাভ করেছেন।
লিওনেল মেসি আয় করছেন যে যে খাত থেকে
লিওনেল মেসি এই মৌসুমে তার আয়ের বড় একটা অংশ পেয়েছেন তার আজীবন অংশীদার অ্যাডিডাস, লাইস, মাস্টারকার্ড, ওয়াচ মেকার জ্যাকব অ্যান্ড কো, কাতারভিত্তিক টেলিকম ওরেডো এবং তার নতুন স্বাক্ষরিত লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড গিনি হিলফিগার, সিস্টার অফ টমি , দ্য মেসি স্টোর ওয়েবসাইট থেকে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান হুকিত জানিয়েছেন, যে এই বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত মেসি ১১৭ টি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন, যা ২৩৫ মিলিয়ন লাইক, কমেন্ট বা শেয়ার পেয়েছে এবং তার প্রচারিত ব্র্যান্ডের জন্য ২২ মিলিয়ন ডলার লাভ করেছেন। লিওনেল মেসি বার্সেলোনা থেকে চলতি মৌসুমে ৯২ মিলিয়ন ডলার পেয়েছেন। যার এক তৃতীয়াংশ পারফরম্যান্স ইনসেনটিভ আকারে।এছাড়াও আর্জেন্টিনা জাতীয় দুলতো আছেই।
মেসির পরেই বিলিয়নিয়ার ক্লাবে যোগদানের অপেক্ষায় আছেন ব্রাজিলিয়ান ও পিএসজি সুপারস্টার নেইমার জুনিয়ার । এখন পর্যন্ত তার ক্যারিয়ারে ৪৫০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছেন। এই মৌসুমে তিনি ১০০ মিলিয়ন ডলাররের কাছাকাছি আয় করতে যাচ্ছেন। এছাড়াও নেইমারর কাছাকাছি আছেন আরেক পিএসজি তারকা এমবাপ্পে।
তবে মজার বিষয় বিলিয়নিয়ার ক্লাবে বর্তমান সময়ের অ্যাথলেটদের সংখ্যা বাড়তে থাকলে, খ্রিষ্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দীর একজন অ্যাথলেটের মোট আয়ের ধারের কাছেও নেয় কেউ। ডায়োক্লস, একজন রোমান রথ দৌড়বিদ যিনি সারাজীবনে আয় করেন ৩৫, ৮৬৩,১২০ সেসটারসেস (রোমান প্রাচীন মুদ্রা)। যার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার। ডায়োক্লস কিভাবে পৌঁছলেন এমন বিশাল অঙ্ক, তাও আবার খ্রিষ্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দীতে, জানতে ক্লিক করুন নিচের লিংকে।
মেসি রোনাল্দো নয়, বিশ্বের সর্বচ্চো আসকারী খেলোয়াড় একজন রথচালক