
ফ্লাশ টয়লেট ছাড়া আজকের আধুনিক শৌচালয় চিন্তায় করা যায় না। সময়ের প্রয়োজনে বর্তমানে বিভিন্ন ধরণের আকর্ষণীয় সব ফ্লাশ টয়লেট দেখামেলে। তবে অন্তত পাঁচ হাজার বছর আগে থেকেই শৌচালয়ের ময়লা পরিষ্কারে পানির ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রাচীন রোমান, মহেঞ্জদারো এবং সিন্ধু সভ্যতার হরপ্পাসহ বেশ কয়েকটি প্রাচীন সভ্যতায় এধরণের শৌচালয়ের ব্যবহার দেখা যায়।
স্যার জন হারিংটনের ফ্লাশ টয়লেট ‘এক্সাস’
তবে বর্তমান শৌচালয়ের আধুনিক ফ্লাশ টয়লেট কিন্তু একদিনে আসেনি। ধাপে ধাপে বিভিন্ন পরিবর্তন ও পরিবর্ধন শেষে আজকের আধুনিক ফ্লাশ টয়লেট। প্রথম আধুনিক ফ্লাশ টয়লেট উদ্ভাবন হয় ইংল্যান্ডে। উদ্ভাবন করেন স্যার জন হারিংটন। জন্য হারিংটন, রানী প্রথম এলিজাবেথের সভাসদদের একজন ছিলেন। পাশাপাশি রানীর অন্যতম আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ১৫৯৬ সালে স্যার জন হারিংটন ফ্লাশ টয়েলটটি উদ্ভাবন করেন। তার তৈরি ফ্লাশ টয়লেটটি ছিলো ২ ফুট দীর্ঘ ও ডিম্বাকৃতির। এটিতে একবার ফ্লাশ করার জন্য ৭.৫ গ্যালন পানি প্রয়োজন হত । হারিংটনের ফ্লাশটির ডিম্বাকৃতির বাটিতে জলাশয় থেকে পানি আসার ব্যবস্থা ছিলো এবং একটি কপাট সংযুক্ত ছিলো। কপাটটি খুলে দিলে পানি এসে ময়লা ধুঁয়ে নিয়ে চলে যেতো। ফ্লাশটি একসাথে ২০টি কমোডে একসাথে পানি ব্যবহারের উপযোগী ছিলো। তিনি এটির নাম দেন এক্সাস। প্রথমে এটি তার নিজের বাড়িতে স্থাপন করেন। পরবর্তীতে, ফ্লাশ টয়লেটটির মডেল রিচমন্ড প্যালেসে রানী এলিজাবেথের জন্য স্থাপন করা হয়। জন হারিংটনের এই উদ্ভাবন বর্জ্য নিষ্কাশনে এক বিরাট শিল্প বিপ্লব আনতে সক্ষম হয়।
এস পাইপ সংযোজন
পরবর্তী সময়ে, প্রায় দুইশো বছর পর ১৭৭৫ সালে ফ্লাশ টয়লেটে একটি পরিবর্তন আসে ইংরেজ উদ্ভাবক আলেকজান্ডার কামিং-এর হাত ধরে। তার পরিবর্তনটি ফ্লাশ টয়লেটে নতুন মাত্রা যোগ করে। তার উদ্ভাবিত ফ্লাশ টয়লেটের উল্লেখযোগ্য দিক ছিল এস-আকৃতির পাইপ। এই বিশেষ পাইপটি টয়লেটে বাতাস প্রবেশে বাঁধা সৃষ্টি করে।
ফ্লাশে বল ককের আগমন
এরপর উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে, লন্ডনের টমাস ক্র্যাপার নামে ফ্লাশ টয়লেটে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনেন। ক্র্যাপারের আবিষ্কারটি শুধু ফ্লাশই নয় আধুনিক পাানির ট্যাঙ্কগুলোর গঠনে বিশেষ পরিবর্তন এনে দেয়। ক্রাপার তৈরি করেন ফ্লাশের বল ককটি। বল ককটি ফ্লাশে পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে। আজ শুধু ফ্লাশেই নয় সকলধরণের ট্যাঙ্ক পানি পূর্ণ করতে ব্যবহার হয় বল ককটি ।



















